দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) রাতভর বর্বরোচিত বিমান হামলায় ফিলিস্তিনের গাজায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৪০৪ জন। আহত হয়েছেন আরও ৫৬২ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি। এই হামলায় বিধ্বস্ত হয়েছে অসংখ্য ঘরবাড়ি, স্কুল এবং আশ্রয়কেন্দ্র। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও বহু মানুষ আটকে আছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পবিত্র রমজান মাসে, সেহেরির সময় ইসরায়েলি বাহিনী আকস্মিকভাবে নির্বিচারে বোমা বর্ষণ শুরু করে। বার্তাসংস্থা আনাদোলুর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে এটিই সবচেয়ে বড় ও ভয়াবহ হামলা। নিহতদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
হামলার পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এক টেলিভিশন ভাষণে বলেন, “এটি কেবল শুরু মাত্র। এখন থেকে হামাসের বিরুদ্ধে আরও ভয়াবহ হামলা চলবে।”
তিনি আরও দাবি করেন, “আমরা যুদ্ধবিরতি বাড়িয়েছিলাম, তবে বিনিময়ে আমাদের জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হয়নি। হামাস আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় আমরা হামলা চালাতে বাধ্য হয়েছি।”
ইসরায়েলি গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফের মধ্যস্থতায় ৫০ দিনের যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। এতে হামাসের কাছে ৫ ইসরায়েলি বন্দির মুক্তি, মানবিক সহায়তা প্রবেশাধিকার এবং তিন ধাপে যুদ্ধবিরতির পরিকল্পনা রাখা হয়েছিল।
হামাস গত শুক্রবার জানায়, তারা মধ্যস্থতাকারীদের প্রস্তাব গ্রহণ করেছে এবং বন্দি বিনিময়ের আলোচনার অংশ হিসেবে একজন ইসরায়েলি-আমেরিকান সৈন্যের মুক্তি দিতে রাজি হয়েছে। কিন্তু নেতানিয়াহু এটিকে অগ্রাহ্য করে বলেন, “আমরা কেবল যুদ্ধক্ষেত্রেই আলোচনা করব।”
গাজায় দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনে ৪৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এদিকে, ইসরায়েলের কারাগারে এখনও ৯,৫০০ ফিলিস্তিনি বন্দি রয়েছেন, যাদের অনেকেই নির্যাতন, চিকিৎসা অবহেলা ও অমানবিক পরিস্থিতির শিকার বলে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
গাজায় নতুন করে ইসরায়েলি হামলার পর পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে লাখো ফিলিস্তিনি আবারও ঘর ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন।